ভোলা দ্বীপটি পদ্মা, মেঘনা ও বহ্মপুত্র নদীর শাখা প্রশাখায় বাহিত পলি দ্বারা গঠিত। পলি, লতা-পাতা ও কচুরিপানা ভাসমান অন্যান্য আবর্জনা ধীরে ধীরে জমা হয়ে প্রবাল দ্বীপের ন্যয় চর পড়া শুরু হয়। এর সাথে পলি জমে-এ মূল ভূখণ্ডের উৎপত্তি হয়। এই দ্বীপের বয়স প্রায় ৫০০ বছর।
ভোলা নামকরণের পিছনে স্থানীয়ভাবে একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। ভোলা শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নামক খালটি এখনকারমত অপ্রশস্ত ছিলনা। এক সময় এটা পরিচিত ছিল বেতুয়া নদী নামে। খেয়া নৌকার সাহায্যে লোকজনের পারাপারের কাজ চলত। খুব বুড়ো এক মাঝি এখানে খেয়া নৌকার সাহায্যে লোকজনকে পারাপারের কাজ করত। তাঁর নাম ছিল ভোলা গাজী পাটনী। বর্তনামে ভোলা সরকারি কলেজ সংলগ্ন যুগিরঘোলের কাছেই তাঁর আস্তানা ছিল। এই ভোলা গাজীর নাম অনুসারেই এক সময় স্থানটির নামকরণ হয় ভোলা।
ভোলা জেলার অন্যতম একটি উপজেলা হলো বোরহানউদ্দিন উপজেলা। তৌজি নং-৬৪৩৮-৩৯, পরগনা কৃষ্ণ দেবপুর, জেলা বাকেরগঞ্জ, ফরিদপুরের উপসীর কালী প্রসন্নের নামানুসারে কয়েক বছর বর্তমান বোরহানউদ্দিন উপজেলা কালীগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। ১৮৭২ সালের ১৫ই জানুয়ারি এই অঞ্চল সার্ব হয়। এরপর ইহা বোরহানউদ্দীন হাওলাদারের হাট নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন বরমগঞ্জ (বর্তমান বোরহানগঞ্জ অথবা বরহানগঞ্জ বাজার) এলাকা ভট্টচার্য্যদের আর বোরহানউদ্দীন হাট এলাকা হাওলাদারদের ছিল। ১৯৩৯ সালের দিকে বর্তমান বোরহানউদ্দিন জামে মসজিদের মুসল্লিদের ব্যবহারের নিমিত্ত তৈরী পুকুরের ঘাটলা বন্ধ করে দেওয়ায় মুসলমানদের ভিতর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রথমে কয়েক দখা মামলা মকদ্দমা পরে সংঘস্য হয়। অনেক তিক্ততার পোলের পোড়া হতে বর্তমান থানা পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে মোট ৫৫ ফুট জায়গা বোরহানউদ্দিন হাওলাদারের নামে বন্দোবস্ত নিয়ে বর্তমান নাম (বোরহানউদ্দিন) দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালে শৈলবালা চৌধুরানীর নিকট থেকে বর্তমান থানার জায়গা বন্দোবস্ত নেয়া হয় এবং ১৯২৮ সালের ১৭ই আগষ্টের ১৮৯৬নং চিঠির বলে নিয়মিতভাবে থানার কার্যক্রম চলে আসছে। ১৯৮৩ সালের ২রা জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে বোরহানউদ্দিন থানাকে উপজেলায় উন্নিত করা হয় এবং ৯টি ইউনিয়ন সমন্নয়ে এই উপজেলা গঠিত।
তথ্য সূত্র : ভোলা জেলার ইতিহাস
লেখক : প্রফেসর মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস